আকার, আয়তন ও আকৃতি এবং ক্ষমতার ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায় -
১. সুপার কম্পিউটার ।
২. মেইনফ্রেম কম্পিউটার।
৩. মিনি - কম্পিউটার।
৪. মাইক্রো - কম্পিউটার বা পারসোনাল কম্পিউটার।
১) সুপার কম্পিউটার (Super Computer)
সুপার কম্পিউটার হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী, দ্রুতগতি সম্পন্ন ব্যয়বহুল কম্পিউটার। আকৃতিগত দিক হতে সবচেয়ে বড় আকৃতির এ শ্রেণীর কম্পিউটার গুলোর তথ্য সংরক্ষন ক্ষমতা, কার্য সম্পাদনের বা তথ্য প্রক্রিয়াকরনের দ্রুততা অবিশ্বাস্য রকমের। সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও জটিল বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষনকাজ করা যায়। বর্তমানে ব্যবহৃত সুপার কম্পিউটার গুলোতে একসঙ্গে একাধিক প্রসেসর ব্যবহার করা হয়। সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষনা, বিপুল পরিমান তথ্য বিশ্লেষন, নভোযান, জঙ্গি বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ন্ত্রন, মহাকাশ গবেষনা, পরমাণু গবেষনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
আমেরিকা ও জাপানের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান সুপার কম্পিউটার তৈরি করে। এদের মধ্যে আমেরিকার Cray
Research Inc, Data Control Corporation এবং জাপানের Nippon
Electric Company এর নাম উল্লেখযোগ্য। CRAY
– 1, CYBER – 205 ইত্যাদি সুপার কম্পিউটারের উদাহরন।
২) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)
মেইনফ্রেম হচ্ছে এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সাথে টারমিনাল (নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটার) যুক্ত করে এক সাথে অনেক মানুষ কাজ করতে পারে। এ কম্পিউটারে একাধিক প্রক্রিয়াকরণ অংশ থাকে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে। যেমন ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান, বৈজ্ঞানিক গবেষনার পরিচালনা নিয়ন্ত্রন ও বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের জন্য মেইনফ্রেম কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৬৫ সালে পরমাণু শক্তি কমিশনে মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট কোম্পানি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত হয়। UNIVAC
1100/01, IBM 4341, NCR N 8370 ইত্যাদি কম্পিউটার এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
৩) মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)
মিনি - কম্পিউটারকে মিনি - ফ্রেম কম্পিউটারও বলা হয়। মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের এ কম্পিউটার টার্মিনালের মাধ্যমে একসঙ্গে অনেক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে। এর কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরন অংশের জন্য সাধারনত এক বোর্ড বিশিষ্ট বর্তনী ব্যবহৃত হয়। বড় আকারের শিল্প ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানে মিনি - কম্পিউটারের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। ব্যংকিং কার্যক্রমে এ ধরনের কম্পিউটারের সচারাচার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। PDPII,
IBM, S/34, NCR, S/9290 ইত্যাদি মিনি কম্পিউটারের উদাহরন।
৪) মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer)
মাইক্রোকম্পউটার হচ্ছে মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে সর্বাপেক্ষা বহুল ব্যবহৃত কম্পিউটার। সাধারনত একজন লোক একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে বলে মাইক্রোকম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলা হয়। এ জাতীয় কম্পিউটার সহজে বহনযোগ্য, দাম তুলনামূলকভাবে কম এবং রক্ষনাবেক্ষনও সহজ হওয়ার ফলে ব্যবহাকারীদের মাঝ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, দাপ্তরিক, সরকারি, সর্বোপরি বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে এ ধরনের কম্পিউটার গুলোর ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। IBM
PC, APPLE Macintosh ইত্যাদি মাইক্রোকম্পিউটারের উদাহরন। প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতির সাথে সাথে মাইক্রোকম্পিউটারের আকৃতিতে নানা রকম পরিবর্তন হয়েছে। মানষের ব্যবহারিক সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন আকৃতিতে মাইক্রোকম্পিউটার বাজারে এসেছে। যেমন -
১. ডেস্কটপ কম্পিউটার।
২. ল্যপটপ কম্পিউটার।
৩. নোটবুক কম্পিউটার।
(১) ডেস্কটপ কম্পিউটার (Desktop Computer)
ডেস্কে বা টেবিলে স্থাপন করে যে মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করা যায় তাকে ডেস্কটপ কম্পিউটার বলে। বিভিন্ন রকম কাজে অফিস Ñ আদালতে এ জাতীয় কম্পিউটার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
(২) ল্যাপটপ কম্পিউটার (Laptop Computer)
সহজে বহনযোগ্য এ ধরনের কম্পিউটার গুলোর বহ্যিক আকার ব্রিফকেসের মতো। ল্যাপ (খধঢ়) অর্থ হলো কোলের উপরে। কোলের উপরে রেখে ব্যবহার করা যায় বলে একে ল্যাপটপ কম্পিউটার বলে। বর্তমানে ল্যাপটপ কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা পারসোনাল কম্পিউটার বা ডেস্কটপ কম্পিউটারের সমতুল্য বলা চলে।
(৩) নোটবুক কম্পিউটার (Notebook Computer)
নোটবুকের মত ছোট আকৃতির ও হাতে রেখে ব্যবহার করা যায় বলে এ কম্পিউটার গুলোকে নোটবুক কম্পিউটার বলে। এ কম্পিউটার গুলোর আকার নোটবুকের মত।
0 comments:
Post a Comment